মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ কেরানীগঞ্জবাসী

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ কেরানীগঞ্জবাসী

মো.শাহিন বিশেষ  প্রতিনিধি

শীতের আমেজ শেষ হতে না হতেই  মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন  কেরানীগঞ্জবাসী। স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও মশার উপদ্রব বেড়েছে চার গুণ। বদ্ধজলাশয় ও নর্দমায় আবর্জনার স্তূপ ঠিক মতো পরিষ্কার না করায় কিউলেক্স মশার রাজত্ব চলছে।  দিনরাত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ কেরানীগঞ্জবাসী।বাসাবাড়ি-কর্মস্থল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সবখানেই মশার দাপট, কোথাও নিস্তার পাওয়া যাচ্ছে না মশার কামড়ে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের পর হঠাৎ গরম কিউলেক্স মশার প্রজননের খুবই উপযোগী। আবহাওয়ার কারণে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারী, মার্চে কিউলেক্স মশা বাড়ে।এ সময় বদ্ধ জলাশয়, কাভার্ড ড্রেন, বক্সকালভার্ট, প্লাস্টিক বর্জ্য ও ডাবের খোসায় জমে থাকা পানিতে কিউলেক্স মশার বংশবিস্তার ঘটছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে,কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের  সড়কের আশপাশে যত্রতত্র উন্মুক্ত  ময়লা-আর্বজনার স্তুপ।সময়মতো রাস্তাঘাট ও খোলা জায়গা থেকে ময়লা তুলে না নেওয়ায় বাড়ছে মশার উৎপাত।বিভিন্ন এলাকায় পঙ্গপালের মতো মশা উতরে দেখা যায়।দিন নেই,রাত নেই চলছে এদের অত্যাচার। বাসাবাড়ি, অফিস, খেলা মাঠসহ সর্বত্রই মশার উপদ্রব। মশা অত্যাচার বাদ যাচ্ছে না হাসপাতালগুলোও। মশার উৎপাত এত বেশী যে কয়েল, স্প্রে বা মশা মারার ব্যাট কোন কিছুই কাজ হচ্ছে না। মশার অত্যাচার অতিষ্ঠ জনগণ। তেমনি বাড়ছে মশা বাহিত রোগের ঝুঁকিও। গতবছর  আশঙ্কাজনকভাবে দেখা দিয়েছিল চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ফলে জনমনে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের  বাসিন্দা ইলিয়াস হোসাইন বলেন, কার্যকারী পদক্ষেপের অভাবে কেরানীগঞ্জে  মশার উপদ্রব অনেক বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না।  কয়েল জ্বালিয়ে বা অ্যারোসল স্প্রে করেও রেহাই পাচ্ছি না। রাত বা সন্ধ্যায়ই নয়, দিনের বেলায়ও এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধনে কতৃপক্ষের  কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ফারজানা বেগম বলেন, সন্ধ্যার আগেই বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করা হয়। তার পরও মশার কামড় থেকে রক্ষা নেই। ছেলেমেয়েরা পড়তে বসলে মশার কামড়ে হাত-পা, মুখে রক্ত বিন্দু জমে থাকে। রান্নাঘরে কাজ করতে গেলে কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ করে মশা।রাতে  মশারি টানিয়েও রেহাই পাওয়া যায় না।মশা মারতে কয়েল, স্প্রে, বৈদ্যুতিক ব্যাট সবই কিনেছি, কিন্তু তাতেও মশার উপদ্রব থেমে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসনের থেকে যে ওষুধ দেয় তাতে তো মশা মরে না, খালি ধোঁয়া হয়। এভাবে নামমাত্র স্প্রে না করে মশা মারার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে এটাই প্রত্যাশা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন,শীতের সময় মশার উপদ্রব কিছুটা বাড়ে।আমাদের বরাদ্দের  তুলনায় জনসংখ্যার চাপ অধিক।সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে মশা নিধনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যানদের ওয়ার্ড ভিত্তিক মশা নিধনের কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন